Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২১st সেপ্টেম্বর ২০২৩

গণশুনানি, “পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী (পিএমকে)”, (সনদ নং-০০৩১২)


প্রকাশন তারিখ : 2023-08-10

প্রতিবেদন (গণশুনানি)

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি

শুণানীস্থল: ‘পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী (পিএমকে)’, (সনদ নং: ০০৮৬২-০০৩৮৭-০০৩১২),

ফরিদপুর শাখা কার্যালয়।

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটির উদ্যোগে ২৩/০৭/২০২৩ তারিখে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান ‘পল্লী মঙ্গল কর্মসূচী (পিএমকে)’ (সনদ নং- ০০৮৬২-০০৩৮৭-০০৩১২) এর ফরিদপুরস্থ শাখা কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের সরাসরি অংশগ্রহনে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত গণশুনানীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটির নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ হুমায়ূন কবীর, বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন অথরিটির পরিচালক জনাব সুতপা চৌধুরী, এছাড়াও উপপরিচালক সর্বজনাব মুহাম্মদ শাহ জালাল, মোঃ আব্দুল হক, সহকারী পরিচালক স্বরুপ আচার্য্য, অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেট মোর্শেদ আলম । ‘পিএমকে’ এর প্রধান নির্বাহী জনাব কামরুন নাহার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৪০ জন গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন। জনাব মোঃ হুমায়ূন কবীর গণশুনানির উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা, গ্রাহকদের ঋণগ্রহণ প্রক্রিয়া, ঋণের ব্যবহার, সার্ভিস চার্জের হার, কিস্তি সংখ্যা, ঋণের ওভারল্যাপিং, গ্রাহকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ সন্তানদের পড়াশুনা, শিশুদের টিকা প্রদান, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন। জনাব সুতপা চৌধুরী প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে “পিএমকে” প্রতিষ্ঠানকে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য আহবান জানান। তিনি গ্রাহকদের পাসবই নিজেদের কাছে সংরক্ষণ এবং ঋণের টাকার সঠিক ব্যবহার করে সাবলম্বী হওয়ার পরামর্শ দেন। এছাড়া কৃষিকাজ, মৎস্যচাষ, পশুপালন ইত্যাদি বিষয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় ক্ষুদ্র আকারে হলেও খামার/উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। জনাব মুহাম্মদ শাহ জালাল সদস্যদের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সমিতির সভাপতি ও মাঠকর্মীদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিষয়ে বিভিন্ন উপদেশ দেন। পাশাপাশি গ্রাহকদের নিয়মিত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদান ও আদায় কার্যক্রমে সহায়তা করার পরামর্শ প্রদান করেন। জনাব মোঃ আব্দুল হক গ্রাহকদের পাশবই যথাযথভাবে সংরক্ষন, সঞ্চয়ের সুদ ও সার্ভিস চার্জ হিয়াবায়নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন।  সভায় উপস্থিত প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সমিতির সদস্য সর্বজনাব শান্তা আক্তার, আফরোজা বেগম, সাফিয়া বেগম, শাবানা আক্তারসহ অন্যান্য সদস্যগণ তাদের আপদকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে প্রশংসা করেন এবং এর পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহককে গবাদি পশু, হাঁস মুরগী পালন, সেলাই প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত এলাকায় পিএমকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদেরকে তৈরী পোশাক কারখানায় কাজের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ৩ মাসের একটি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। ফরিদপুর শাখার মধ্যভাসান চর সমিতির সদস্য আফরোজা আক্তার তার স্বামীর ব্যবসার জন্য উক্ত প্রতিষ্ঠান হতে ১.২৫ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন এবং বর্তমানে তারা আর্থিকভাবে সচ্ছল মর্মে জানান। এছাড়াও রওশন আরা বেগম, কমলা বেগম, রেহানা আক্তারসহ অন্যান্য সদস্যগণ প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ ও অন্যান্য কৃষি পণ্যের ব্যবসা করেন এবং বর্তমানে তারা সবাই সফল উদ্যোক্তা। এভাবে সকল সদস্য প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক অগ্রগতি ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে বর্ণনা ও অনুভূতি ব্যক্ত করেন।   

প্রসঙ্গ উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের ফরিদপুর শাখার সদস্য রেহানা আক্তারসহ আরো কয়েক জন সদস্য অথরিটির কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নিম্নোক্ত প্রস্তাবসমূহ পেশ করেন:

(১) ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের কৃষি ঋণের গ্রেস পিরিয়ড কমপক্ষে ২/৩ মাস করা;

(২) গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সাপ্তাহিক কিস্তির পরিবর্তে পাক্ষিক (১৫ দিন)/ মাসিক ভিত্তিতে কিস্তি আদায়;

(৩) ঋণের সার্ভিস চার্জ হ্রাসকরণ;

(৪) গ্রাহকের প্রকল্প ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় ঋণের সিলিং নির্ধারণ যাতে গ্রাহককে একইসাথে একাধিক প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ করতে না হয়;

(৫) গ্রাহকদের সন্তানদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহে চাকুরির সুযোগ সৃষ্টি;

(৬) ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক ঋণের নিশ্চয়তাকারী হিসেবে একজন পুরুষ ব্যক্তিকে চাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে পরিবারে পুরুষ সদস্য না থাকলে ঋণ গ্রহনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেকোনো উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে ঋণের নিশ্চয়তাকারী হিসেবে মনোনয়নের সুযোগ প্রদান;

(৭) গ্রাহকদের গবাদি পশু, হাঁস মুরগী পালন, সেলাই প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান;

(৮) গ্রাহকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ঋণ প্রদান;

(৯) গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় রেখে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ প্রদান।

তবে গ্রাহকদের আমানতের সুদ, সার্ভিস চার্জ হিসাবায়ন ও তাদের ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ক্ষুদ্রঋণের কার্যকারিতা বিষয়ে সুষ্পষ্ট ধারণা তৈরীর জন্য গ্রাহক পর্যায়ে আর্থিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে। এ বিষয়ে সেক্টর প্রতিনিধিদের আরো মনোযোগী হওয়ার সুযোগ রয়েছে মর্মে জনাব সুতপা চৌধুরী সভাকে অবহিত করেন।

পরিশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং দেশের বর্তমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা বিষয়ে নির্বাহী পরিচালক মহোদয় গ্রাহকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করেন। সর্বশেষে সভাপতি জনাব কামরুন নাহার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত গ্রাহকবান্ধব গুরুত্বপূর্ণ কিছু সেবা যেমনঃ শিক্ষাবৃত্তি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রশিক্ষণ প্রদান, গৃহায়ন ঋণের ক্ষেত্রে নারী সদস্যের নামে ভূমির মালিকানা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহনের কথা উল্লেখ করেন। পরিশেষে, সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণশুনানি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।