Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

গণশুনানি, ‘সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)’ (সনদ নং ০০৮৯৫-০০৬৯৬-০০২২৫)


প্রকাশন তারিখ : 2024-09-28

শুনানিস্থল: স্টার সেন্টার, ‘সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)’ (সনদ নং ০০৮৯৫-০০৬৯৬-০০২২৫), তালা, সাতক্ষীরা।

 

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি’র উদ্যোগে ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে সাতক্ষীরা জেলাস্থ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান ‘সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)’, (সনদ নং ০০৮৯৫-০০৬৯৬-০০২২৫) এর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ের স্টার সেন্টারে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে সরাসরি গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। উল্লিখিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটি’র নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ নূরে আলম মেহেদী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটির পরিচালক জনাব মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটির যুগ্ম পরিচালক জনাব প্রদীপ কুমার ঘোষ এবং সমন্বয়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটির সহকারী পরিচালক জনাব রাব্বিউল হাসান শিপন। ‘সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)’ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শেখ ইমান আলী উল্লিখিত সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের ৩১জন গ্রাহক, ১১জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের ৫জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। 

যুগ্ম পরিচালক জনাব প্রদীপ কুমার ঘোষ তাঁর সঞ্চালনার পাশাপাশি অথরিটির বিধি-বিধান অনুযায়ী গ্রাহকের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে গ্রাহকদের অবহিত করেন। এছাড়াও তিনি তাঁর উপস্থাপনার মাধ্যমে গ্রাহকদের ক্ষুদ্রঋণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন। অথরিটি’র কার্যক্রম সম্পর্কে গ্রাহকদের অবহিত করার পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও সিটিজেন চার্টার বিষয়ে আলোচনা করেন।

পরিচালক জনাব মোহাম্মদ কামাল হোসেন গণশুনানির উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা, অবৈধ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন এবং মেয়াদী আমানত রাখার বিষয়ে গ্রাহকদের সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়াও অথরিটির বিধি-বিধান অনুযায়ী গ্রাহকদের ঋণগ্রহণ প্রক্রিয়া, ভর্তি ফি, পাশবই ও ঋণ ফরম বাবদ সর্বোচ্চ ২৫/- টাকা, ঋণের সার্ভিস চার্জ (ক্রমহ্রাসমান স্থিতি পদ্ধতিতে) ২৪%; গ্রেস পিরিয়ড ১৫ দিন; কিস্তি সংখ্যা ৪৬টি; সঞ্চয়ের সুদ ৬% ইত্যাদি নিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। সার্বিক আলোচনায় ঋণ প্রদান ও আদায় কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা, প্রয়োজন অনুসারে ঋণ গ্রহণ ও ঋণের যথাযথ ব্যবহার, নিয়মিতভাবে ঋণের কিস্তি পরিশোধ, নির্ধারিত সময়ের পূর্বে ঋণ পরিশোধ করলে বিবেট এর সুযোগ ইত্যাদি বিষয়ে গ্রাহকদের অবহিত করার পাশাপাশি গ্রাহকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, সন্তানদের পড়াশোনা ও কর্মমুখী শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন।

নির্বাহী পরিচালক জনাব নূরে আলম মেহেদী গণশুনানি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ক্ষুদ্রঋণ সংশ্লিষ্ট যেকোনো তথ্য, পরামর্শ ও অভিযোগের জন্য অথরিটির হটলাইন ১৬১৩৩, অথরিটি’র ওয়েবসাইট ব্যবহার করে যে কোনো কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি গণশুনানিতে উপস্থিত গ্রাহকদের বক্তব্যের আলোকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ প্রদান করেন। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ নিয়ে দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় সংগ্রাম করে সফল হওয়া গ্রাহকদের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং অন্য গ্রাহকদেরকেও ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণ এবং এর সর্বোত্তম ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করেন। কারিগরি ও জীবনমুখী শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্রঋণ সেক্টরের উল্লেখযোগ্য অবদানকে তিনি আলোচনায় তুলে ধরেন। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড এর সর্বোচ্চ সুবিধা আদায়  করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অবদান রাখার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এছাড়াও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়ন ও অংশীদারিত্বমূলক সমাজ গড়তে পরবর্তী প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তোলার পাশাপাশি টেকসই সমাজ গড়ার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

গণশুনানি অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সমিতির সদস্য সর্বজনাব কাকলি সরকার, পাপিয়া সুলতানা, প্রার্থনা বিশ্বাস, ভারতী বিশ্বাস, আমিনুর ইসলাম, আব্দুল আহাদ, বিলাল হোসেন, মাকসুদুর রহমান শেখ, ঊষা দাসসহ অন্যান্য সদস্যগণ প্রতিষ্ঠানের সদস্য কল্যাণ তহবিল হতে প্রাপ্ত সুবিধাসহ তাদের আপদকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে প্রশংসা করেন এবং উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ করে তারা প্রায় সকলেই হতদরিদ্র অবস্থা হতে উদ্যোক্তা হিসেবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন এবং স্বচ্ছল জীবন-যাপন করছেন মর্মে জানান।

প্রতিষ্ঠানের সদস্য জনাব কাকলি রাণী সরকার উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান হতে সর্বশেষ ৬০,০০০/- টাকা ঋণ গ্রহণ করে গলদা চিংড়ি উৎপাদনে বিনিয়োগ করেন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকেই প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন। পূর্বে মহাজনের থেকে ঋণ গ্রহণ করে জীবন-যাপনই দুরূহ ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটি হতে প্রশিক্ষণ ও ঋণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও প্রশিক্ষণ দিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে নিয়ে টেকসই ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখছেন।

জনাব আমিনুর ইসলাম প্রতিষ্ঠান হতে সর্বশেষ ২ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করে তা ফার্মেসিতে বিনিয়োগ করে বর্তমানে স্বচ্ছল জীবন-যাপন করছেন মর্মে জানান। করোনাকালীন সময়ে চাকরিচ্যূত হয়ে অনন্যোপায় হয়ে প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ করেন। শুরুতে পুঁজি না থাকলেও বর্তমানে তার ব্যবসার পরিধি যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে আবার অন্যদিকে পুঁজিও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, গণশুনানিতে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যগণ তাদের নিজ নিজ সফলতার গল্প শুনান।

উল্লেখ্য যে, উল্লিখিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে উপস্থিত গ্রাহক সর্বজনাব বিলাল হোসেন ও ঊষা দাসসহ আরো কয়েকজন সদস্য অথরিটির কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নিম্নলিখিত প্রস্তাবসমূহ পেশ করেন :

(১) বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ঋণ ফেরত প্রদানে সময় বৃদ্ধি করা;                                                    

(২) ঋণের সার্ভিস চার্জ কমানো;

(৩) সদস্যদের জন্য কর্মসংস্থান উপযোগী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি (যেমন: ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণ গ্রহীতাদের জন্য কৃষি, মৎস চাষ, পশুপালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ, দর্জি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি) এর আয়োজন করা;

(৪) প্রতিষ্ঠানের ঋণের আকার বৃদ্ধি করা।

প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শেখ ইমান আলী অথরিটি’র সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণে গ্রাহকদের উদ্বুদ্ধ করেন। একইসাথে অবৈধ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান হতে ঋণ গ্রহণ ও সঞ্চয় জমাকরণ হতে বিরত থাকার জন্য গ্রাহকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি অথরিটির কর্মকর্তাদের সহযোগিতাপূর্ণ ও আন্তরিক মনোভাবের প্রশংসা করেন। পরিশেষে, সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি গণশুনানি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।