গণশুনানি, ‘শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন’ (সনদ নং ০১৮)

মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটির উদ্যোগে ৩১/০৫/২০২৩ তারিখে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান ‘শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন’, (সনদ নং: ০০১৭৬-০০০৫৯-০০০১৮) এর সহযোগীতায় নরসিংদী জেলার মুসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়াম অডিটরিয়ামে প্রতিষ্ঠানটির নরসিংদী জেলায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহকদের সাথে সরাসরি গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অথরিটির নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ হুমায়ূন কবীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন অথরিটির উপপরিচালক সর্বজনাব মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, মোঃ আবদুল হক, সহকারী পরিচালক জনাব মিনহাজুল আবেদীন, অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জনাব মোর্শেদ আলম। ‘শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন’ এর সিনিয়র ডিরেক্টর জনাব নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৪০ জন গ্রাহক উপস্থিত ছিলেন। জনাব মোঃ হুমায়ূন কবীর গণশুনানির উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা, গ্রাহকদের ঋণগ্রহণ প্রক্রিয়া, ঋণের ব্যবহার, সার্ভিস চার্জের হার, কিস্তি সংখ্যা, ঋণের ওভারল্যাপিং, গ্রাহকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ সন্তানদের পড়াশুনা, শিশুদের টিকা প্রদান, স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য রাখেন। জনাব মুহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে ‘শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন’ প্রতিষ্ঠানকে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য আহবান জানান। এছাড়া কৃষিকাজ, মৎস্যচাষ, পশুপালন ইত্যাদি বিষয়ে গ্রাহকদের কারিগরি সহায়তা দেয়ার উপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। জনাব মোঃ আবদুল হক গ্রাহকদের নিয়মিত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদান ও আদায় কার্যক্রমে সহায়তা করার পরামর্শ প্রদান করেন। সভায় উপস্থিত প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সমিতির সদস্য জনাব সুমি আক্তার, শাহনাজ বেগম, আনোয়ারা বেগম, লাভলী খাতুনসহ অন্যান্য সদস্যগণ প্রতিষ্ঠানের সদস্য কল্যাণ তহবিল হতে প্রাপ্ত সুবিধাসহ তাদের আপদকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের বিষয়ে প্রশংসা করেন এবং এর পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহককে মৌসুমি ঋণ, দুর্যোগকালীন ঋণ প্রদানসহ সেলাই প্রশিক্ষণ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব করেন।

গ্রাহকদের আমানতের সুদ, সার্ভিস চার্জ হিসাবায়ন ও তাদের ব্যবসার পুঁজি হিসেবে ক্ষুদ্রঋণের কার্যকারিতা বিষয়ে সুষ্পষ্ট ধারণা তৈরীর জন্য গ্রাহক পর্যায়ে আর্থিক শিক্ষার প্রয়োজন আছে। এ বিষয়ে সেক্টর প্রতিনিধিদের আরো মনোযোগী হওয়ার সুযোগ রয়েছে মর্মে জনাব মুহাম্মদ মিজানুর রহমান সভাকে অবহিত করেন।

উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রতিষ্ঠানের নরসিংদী জেলার ভেলানগর শাখার আদুরি বেগম, ঘোড়াদিয়া শাখার আনোয়ারা বেগমসহ আরো কয়েক জন সদস্য অথরিটির কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নিম্নোক্ত প্রস্তাবসমূহ পেশ করেন:

(১) ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের মাসিক ঋণের গ্রেস পিরিয়ড কমপক্ষে ২/৩ মাস করা;

(২) মাসিক ঋণের মেয়াদ (Tenure) কমপক্ষে ২ বছর করা;

(৩) ঋণের সার্ভিস চার্জ হ্রাসকরণ;

(৪) ঋণের বিপরীতে জামানত হিসেবে ঋণ নিশ্চয়তা প্রদানকারীর নিকট হতে খোলাচেক গ্রহণ বন্ধ করা;

(৫) এককালীন মৌসুমি ঋণ এবং দুর্যোগকালীন ঋণ সেবা চালু করা;

(৬) মেয়াদী আমানত হিসেবে রক্ষিত অর্থের উপর সুদহার বৃদ্ধি করা;

(৭) সদস্যদের সন্তানদের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ সময়োপযোগী বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা।

পরিশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং দেশের বর্তমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপরেখা বিষয়ে নির্বাহী পরিচালক মহোদয় গ্রাহকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করেন। সর্বশেষে সভাপতি জনাব নাজমুল আহসান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণশুনানি সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।